
ডেস্ক: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের উত্তাপকে নতুন মাত্রা দিয়েছে সঙ্গীত ও অভিনয় জগতের তারকাদের সরাসরি লড়াই। সোমবার থেকে শুরু ভারতের ঘোড়শ লোকসভা নির্বাচনে ভোটারদের মন জয় করতে রাজনৈতিক দলগুলো এবার রুপালি জগতের ব্যাপক সংখ্যক তারকাকে প্রার্থী করেছে। নির্বাচনী দৌড়ে জয়ী হতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হরিয়ানার চন্ডিগড় থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া পর্যন্ত তারকা প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় অবিরাম প্রচার চালিয়েছেন। ৯ পবের্র লোকসভা নির্বাচন চলবে ১২ মে পর্যন্ত, ১৬ মে ঘোষিত হবে ফলাফল। ৫৪৩টি আসনের লোকসভার এই নির্বাচনে তিন সহস্রাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজ্যভিত্তিক মনোনয়নের তালিকা থেকে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী মনোনয়ন দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাঁকুরা থেকে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের মেয়ে মুনমুন সেন, ঘাটাইল থেকে এখনকার টালিউড তারকা দেব (অনীক অধিকারী), মেহিনীপুর থেকে চিত্রনায়িকা সন্ধ্যা রায়, কৃষ্ণনগর থেকে অভিনেতা তাপস পাল এবং বীরভুম থেকে অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে মনোনয়ন দিয়েছে মমতা ব্যানাজির্র দল। এছাড়া উত্তর মালদহ থেকে ব্যান্ড শিল্পী সৌমিত্র রায়, বালুরঘাট থেকে নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষ এবং বহরমপুর থেকে সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে চলচ্চিত্র তারকা তাপস পাল ও শতাব্দী রায় বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারো তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। পশ্চিবঙ্গের বাইরে নয়া দিল্লি থেকে বিশ্বজিৎকে মনোনয়ন দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারকাদের মনোনয়ন দেয়ার তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের পরেই আছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
পশ্চিমবঙ্গের শ্রীপুর থেকে সুরকার বাপ্পী লাহিড়ী ও আসানসোল থেকে গায়ক বাবুল সুপ্রিয় এবং হাওড়া থেকে টালিউড তারকা জর্জ বেকারকে মনোনয়ন দিয়েছে তারা। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে চন্ডিগড়ে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তারকা শিল্পী কিরন খের। তার বিপক্ষে আম আদমি পাটির্র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চিত্রনায়িকা গুল পানাং। এই আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক রেলমন্ত্রী পবন কুমার বানসাল। বিহারের পাটনা থেকে অভিনেতা শত্র“ঘœ সিনহা, গুজরাটের পূর্ব আহমেদাবাদ থেকে অভিনেতা পরেশ রাওয়াল, উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে অভিনেতা রাজ বাব্বর ও অন্ধ্র প্রদেশের মথুরা থেকে হেমা মালিনীর মতো খ্যাতিমান তারকারাও বিজেপির পদ্মফুল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন।
দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হেমা মালিনী
রাজিব-সোনিয়ার ছেলে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে দেখা হচ্ছে, সেই রাহুল গান্ধির উত্তর প্রদেশের আমেথির আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে ছোট পর্দার তারকা স্মৃতি ইরানিকে। কংগ্রেস থেকে জৈনপুরের আসনে সুপারস্টার রবি কৃষাণ, বিহারের মীরাটে চিত্র নায়িকা নাগমা প্রার্থী হয়েছেন। উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌ থেকে আমআদমি পাটির্র হয়ে (এএপি) অভিনেতা জাভেদ জাফরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতস্ত্র প্রার্থী হিসেবে চিত্রনায়িকা রাখি সাওয়ানÑ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মহারাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম মুম্বাই থেকে। একই আসন থেকে আঞ্চলিক দল এমএনএস এর প্রার্থী হয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ মাঞ্জরেকার। তামিলনাড়ূ ও অন্ধ্র প্রদেশের ভোটাররা তারকাদের বেশ পছন্দ করেন। অতীতের লোকসভা নির্বাচনে ওই দুই রাজ্যেই রূপালি পর্দার তারকা এন টি রামা রাও এবং এম জি রাম চন্দ্রনের মতো তারকাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। ক্রীড়াঙ্গন ও অন্যান্য কারণে যাদের তারকা খ্যাতি রয়েছে, তাদের অনেককেও এবার মনোনয়ন দিয়েছে বিভিন্ন দল। এদের মধ্যে দার্জিলিং থেকে ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া এবং যাদবপুর থেকে নেতাজি সুভাষ বসুর নাতি অধ্যাপক সুগত বসু তৃণমূল কংগ্রেসের মনোনয়ন পেয়েছেন। বারাসত থেকে জাদুকর পি সি সরকার (জুনিয়র) লড়বেন বিজেপির হয়ে। আর কংগ্রেস থেকে উত্তর প্রদেশের ফুলপুরে ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ মনোনয়ন দিয়েছে। গত তিন দশক ধরে বেশ কিছু তারকা জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু অনেকেই ভোটের ময়দানে নামতে রাজি হননি। এদের মধ্যে রয়েছেন ঔপণ্যাসিক মহাশ্বেতা দেবী, ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার, অভিনেতা উৎপল দত্ত, অভিনেত্রী অপর্ণা সেন; তারকার মেলায় নিজেদের তারা স্বতন্ত্র করেই রেখেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন