GuidePedia

0
শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে বছরের পর বছর ধরে নিন্দুকের নানা কুত্সা আর সমালোচনা সইতে হয়েছে সোনাক্ষী সিনহাকে। ২০১০ সালে ‘দাবাং’ ছবির মাধ্যমে বলিউড অভিষেকের চার বছর পর সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে চলতি বছরের শুরুর দিকে ওজন কমানোর যুদ্ধে নামেন সোনাক্ষী।

অবশেষে সেই যুদ্ধে সফল হয়েছেন তিনি। “ওমেন’স হেলথ” ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক সংখ্যায় হালকা-পাতলা গড়নের সোনাক্ষীর ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার এ নায়িকাকে ‘মোটা’ বলে খ্যাপানোর দুঃসাহস আর কেউ দেখাতে পারবে না।

“ওমেন’স হেলথ” ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা হয়েছেন সোনাক্ষী। সম্প্রতি তিনি ম্যাগাজিনটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে হাজির হন। সেখানে তিনি মন্তব্য করেছেন, ওজন কমিয়ে আকর্ষণীয় শারীরিক অবয়ব অর্জন করাটা মোটেও সহজ ছিল না তাঁর জন্য।

এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘যেসব সমালোচক আমাকে মোটা বলে খ্যাপাতেন তাঁদের মুখ বন্ধ করতে সফল হয়েছি আমি। কিন্তু আমার মতো একজন মানুষ যে কিনা জিমকে রীতিমতো ঘৃণা করে, তার পক্ষে শরীরের ওজন কমানোটা মোটেও সহজ কোনো কাজ ছিল না। সত্যিই জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে আমি খুবই অপছন্দ করি। পারতপক্ষে জিমের ধারেকাছে আমি যাই না। তার পরও আমি শরীরের ওজন কমিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছি।’ এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।

সোনাক্ষী আরও বলেন, ‘কেবল সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতেই শরীরের ওজন কমাইনি আমি। আসলে নিজের কাছে আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যে করেই হোক ওজন কমাব। আর কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য মনস্থির করার পর আমি মাঠে নেমে পড়ি।

যত কষ্টই হোক না কেন, লক্ষ্য অর্জন করে তবেই ক্ষান্ত হই। বরাবরই নিন্দুকেরা আমার দিকে আঙুল তুলে বলত—সে কত মোটা! সে এটা, সে ওটা—এমন আরও কত কী!

এ ধরনের সমালোচনা ওজন কামানোর জন্য অবশ্যই আমার ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করত। কিন্তু শুধু এ কারণেই যে আমি শরীরের ওজন কমিয়েছি, তা বলা যাবে না। আসলে নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা পূরণ করতেই ওজন কমিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছি আমি।’

এদিকে, বেশ কিছুদিন ধরেই ‘আর...রাজকুমার’ ছবির সহ-অভিনেতা শাহিদ কাপুরের সঙ্গে সোনাক্ষীর প্রেমের জোর গুঞ্জন চলছে বলিউডে। গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘আর...রাজকুমার’ ছবিতে এই জুটির রসায়ন মুগ্ধ করে দর্শকদের। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘন ঘন একসঙ্গে দেখা যায় এ জুটিকে। শুধু তা-ই নয়, একই শরীরচর্চা প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরিয়েছেন সোনাক্ষী-শাহিদ।

এতদিন চুপ থাকলেও, সম্প্রতি শাহিদের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুলেছেন সোনাক্ষী। শাহিদের সঙ্গে প্রেমের গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের বাইরে আর কোনো সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছেন ২৬ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।

প্রসঙ্গত, বাড়তি ওজনের কারণে বলিউডে পা রাখার পর থেকেই নানা সমালোচনা শুনে শুনে কান ঝালাপালা হবার জোগাড় হয়েছিল ‘দাবাং’ অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহার।

কিন্তু বরাবরই শরীরের বাড়তি মেদ নিয়ে মোটেও অসন্তুষ্ট নন বলেই জানিয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার মেয়ে সোনাক্ষী। দেরিতে হলেও অবশেষে ওজন কমানোর তাগিদ অনুভব করেন সোনাক্ষী। গত জানুয়ারি মাস থেকে তিনি শরীরের বাড়তি মেদ ঝরানোর জন্য রীতিমতো উঠে-পড়ে লাগেন।

ওজন কমিয়ে মেদহীন আকর্ষণীয় শারীরিক অবয়ব পাওয়ার জন্য শরীরচর্চার পেছনে প্রচুর সময় ব্যয় করেন সোনাক্ষী। তিনি ঘাম ঝরানোর কাজটা করার জন্য জিমের পাশাপাশি নিজের বাড়ির টেরাসকে বেছে নেন।

২০১০ সালে ‘দাবাং’ ছবির মাধ্যমে সোনাক্ষীর বলিউড অভিষেক হয়। ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে প্রায় ৩০ কেজি ওজন কমাতে হয়েছিল তাঁকে। ‘দাবাং’ ছবিতে সালমান খানের বিপরীতে সোনাক্ষীর সাবলীল অভিনয় প্রশংসিত হলেও কিছুটা মুটিয়ে যাওয়া শারীরিক অবয়বের কারণে অনেক তির্যক মন্তব্য শুনতে হয় সোনাক্ষীকে। কিন্তু তার পরও শরীরের ওজন কমানোয় মনোযোগী না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে অনেকেই পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার এ নায়িকাকে ‘মোটা’ বলে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেন।

আবার অনেকে অভিযোগ করেন, সোনাক্ষীর শরীর মোটেও বিকিনি পরার উপযোগী নয় বলে প্রয়োজনেও তিনি এ রকম পোশাকের ধারেকাছে যান না। অনেকের কাছ থেকেই মেদ ঝরিয়ে হালকা-পাতলা হওয়ার পরামর্শ পেয়েছেন সোনাক্ষী। কিন্তু কখনোই তিনি কারও কথায় কান দেননি। বরং শরীরের ওজনসংক্রান্ত প্রশ্ন শুনলেই বেজায় চটে যেতেন।

একবার এক সাক্ষাত্কারে সোনাক্ষী বলেছিলেন, ‘ভারতে একটু মুটিয়ে যাওয়া নারীদেরই আদর্শ ভাবা হয়। দর্শকেরা আমাকে এমন রূপে দেখতেই পছন্দ করেন। কখনোই শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে মাথা ঘামাই না আমি। এটা আমার কাছে কোনো বিষয়ই না। এমন নয় যে, কিছুটা মোটা হওয়ার কারণে আমার কর্মক্ষমতা কম। বরং পাতলা গড়নের যে কারও চাইতে আমি অনেক বেশি পরিশ্রম করতে পারি বলেই আমার বিশ্বাস। শরীরের বাড়তি মেদ নিয়ে আমি মোটেও অসন্তুষ্ট নই।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে সোনাক্ষী আরও বলেছিলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে শরীরের ওজনসংক্রান্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর আর আমি দেব না। এতে করে বিষয়টি নিয়ে কেউ আজেবাজে কিছু লেখার সুযোগ পাবে না। আমি শোরগোল না পাকিয়ে নীরবে কাজ করে যেতেই পছন্দ করি। অন্য কিছু নয়, স্রেফ কাজ দিয়েই সবার মন জয় করতে চাই।’

কিন্তু শেষ পর্যন্ত শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে আকর্ষণীয় শারীরিক অবয়ব পাওয়ার জন্য মনস্থির করেন সোনাক্ষী। গত জানুয়ারি মাস থেকে ওজন কমানোর যুদ্ধে নামেন তিনি। কঠোর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আর শরীরচর্চার মাধ্যমে তিনি নাটকীয়ভাবে শরীরের ওজন কমাতে থাকেন।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম শেষে নিজের ‘সেলফি’ তুলে টুইটারে পোস্ট করেছিলেন সোনাক্ষী। ছবিটিতে কালো পোশাকে অনেকটাই পাতলা গড়নের নতুন এক সোনাক্ষীকে দেখে তাঁর ভক্তদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top