GuidePedia

0
তরুণ প্রজন্ম এখন থ্রিজির অপেক্ষায়
আগামী মাসের শুরুতেই থ্রিজিতে যাচ্ছে নতুন লাইসেন্স পাওয়া অপারেটরগুলো। যদিও কোন কোন অপারেটর পুরোপুরি বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যাবে এ বছরের শেষ নাগাদ। থ্রিজিতে কি সুবিধা মিলবে? কিভাবেই বা পরিবর্তন আসবে? দাম কি নাগালের ভেতরে থাকবে না সাধারণ ব্যবহারকারীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে? গ্রাহকদের এসব প্রশ্নের জবাবে মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছে, সাধারণ ব্যবহারকারীদের নাগালেই থাকবে সবকিছু। কারণ ব্যবসা করার জন্যই তারা এত টাকা দিয়ে স্পেকট্রাম নিয়েছেন। আর থ্রিজি চালু হলে কমে যাবে ভয়েস কল, সবকিছুই মিলবে ডাটা সার্ভিসের মাধ্যমে। আমুল পরিবর্তন আসবে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রেই। জীবনযাত্রার গতি বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।

গতকাল মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে রবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী অক্টোবরেই অপারেশনে যাবে রবি। তারা থ্রিজি নয়, শুরুতেই থ্রি পয়েন্ট ফাইভ জি দিয়ে অপারেশন শুরু করবে। এর আগে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অক্টোবরের শুরুতেই তারা অপারেশনে যাবে।বিটিআরসির কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র পেলেই যন্ত্রপাতি আমদানি শুরু করবে। বাংলালিংক ও এয়ারটেলও জানিয়েছে, এ বছরেই তারা অপারেশন শুরু করবে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গতকাল রবি তাদের টাকা জমা দিয়েছে। আগের দিন সোমবার টাকা দিয়েছিল গ্রামীণফোন। রবি ভ্যাটসহ দিয়েছে ৫২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর গ্রামীণফোন ভ্যাটসহ দিয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। বাংলালিংক গতকাল বিকালে লাইসেন্স ফি ও এক মিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের টাকা নিয়ে গেলেও জমা রাখেনি বিটিআরসি। কারণ একবারেই ভ্যাটসহ পুরো টাকা দিতে হবে। আজ বাংলালিংক টাকা দেবে বলে জানিয়েছে। এয়ারটেল অবশ্য এখনো যোগাযোগ করেনি।

থ্রিজিতে আসলে কি সুবিধা মিলবে, অপারেটররা কতটুকুই বা প্রস্তুত? এমন প্রশ্নের জবাবে মোবাইল ফোন অপারেটরের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। বিটিআরসি অনাপত্তিপত্র দিলেই দ্রুত গতিতে তারা যন্ত্রপাতি আমদানি করবেন। আর আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার কারণে যন্ত্রপাতি বসাতেও খুব একটা সময় লাগবে না। থ্রিজি চালু হলে মোবাইল হ্যান্ডসেটে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে কয়েকগুণ। এখন যে কাজ করতে দশ মিনিট লাগে তখন সেটি হবে এক মিনিটেরও কম সময়ে। আর মোবাইল ফোনেই দেখা যাবে টেলিভিশন। এমনকি যিনি মোবাইলে ফোন করেছেন তার ছবিও দেখা যাবে, জানা যাবে তার অবস্থান। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘরে বসেই সম্পদের নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা যাবে। শহরের সব সড়কের গাড়ির গতিবিধি দেখে অনাকাঙ্ক্ষিত জ্যাম নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে পুলিশ। সহজতর হবে দৈনন্দিন অন্যান্য সব কাজও।

ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক থ্রিজি সেবা শুরু করেছে একমাত্র রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। তাদের ১০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম দেয়া হয়েছে। বর্তমানে টেলিটকের থ্রিজি গ্রাহক ৫ লাখের বেশি। অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে টেলিটকের থ্রিজি সেবায় কোথাও কোথাও বিঘ্ন ঘটছে। তবে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছে, তারা যে অবকাঠামো ব্যবহার করছে তাতে থ্রিজির গ্রাহকরা সর্বোচ্চ সেবা পাবেন। জানা গেছে, দেশে অর্ধকোটিরও বেশি হ্যান্ডসেট রয়েছে যা দিয়ে থ্রিজি সেবা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে ৪/৫ হাজার টাকায়ও থ্রিজি ব্যবহার হয় এমন হ্যান্ডসেট বাজারে পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে এর দাম আরো কমবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গ্রামীণফোনের চিফ টেকনোলজি অফিসার তানভির মোহাম্মদ বলেন, যেকোনো অপারেটরের আগেই তারা থ্রিজি সেবা চালু করছেন। এজন্য তারা অনেক আগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। এখন থ্রিজি যন্ত্রাংশ আনতে বিটিআরসি অনাপত্তি ও অন্যান্য অনুমোদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা কাজ শুরু করবেন। তিনি বলেন, বিশ্বের থ্রিজি বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ এই মুহূর্তে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। গ্রামীণফোনের মূল কোম্পানি টেলিনরের অনেক দেশে থ্রিজি সেবা পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রামীণফোনের বেশকিছু কর্মকর্তা নরওয়ে, সুইডেনে গিয়ে থ্রিজি বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা নিয়ে এসেছেন। সবমিলিয়ে তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বাংলালিংক ও এয়ারটেলের কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, তারাও আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। ফলে খুব দ্রুতই তারা এই সেবা দিতে পারবেন। থ্রিজি সেবা চালু করতে গত সোমবার হুয়াওয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে এয়ারটেল। চুক্তির পর এয়ারটেলের সিইও ক্রিস টবিট বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে থ্রিজি সেবা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে এবং দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top