GuidePedia

0
বাংলাদেশে বর্তমান মোট ফেসবুক ব্যবহারকারী ৫৬ লাখ। এর মধ্যে ১১ লাখই ভুয়া বা ফেইক একাউন্ট। তথ্য ও যোগাযোগ খাতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এ তথ্য জানিয়েছে।

ফেসবুকের যে আইডিগুলোতে ব্যবহারকারী তার নাম, পরিচয়, লিঙ্গ, ছবি, ব্যক্তিগত তথ্য, কর্মক্ষেত্র, পড়াশোনার স্থানসহ ব্যক্তিগত বিষয়ে ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে, সেগুলোকে ফেক আইডি বলা হয়।

ভুয়া আইডি দিয়ে প্রতারণার বিষয়টি এখন এমন এক স্তরে পৌঁছেছে যে ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) দ্বারস্থ হচ্ছেন।

সংশোধিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারা লঙ্ঘন করলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে। এক কোটি টাকা জরিমানাও হতে পারে। কেউ ভুয়া আইডির কারণে প্রতারণার শিকার হলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যেতে পারেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক নারী কর্মকর্তা বহুদিন পর্যন্ত জানতেই পারেননি, তার ছবি আর নাম ব্যবহার করে আপত্তিকর নানা কাজ করে যাচ্ছেন তারই এক পুরুষ সহকর্মী। সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে ওই নারীর মতো প্রতিদিনই কেউ না কেউ অপরিচিত বা পরিচিতজনদের মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছেন।

দেশে প্রতিদিনই বিভিন্ন ক্লিক ফার্মের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেসবুকে লাইক বৃদ্ধি করতে এসব ক্লিক ফার্মগুলো বাণিজ্যিকভাবে চুক্তিগ্রহণ করে থাকে। দেখা যায় যে, লাইক বৃদ্ধি করতে এসব কর্মীরা নিজেদের নামে বেনামে প্রায় সহস্রাধিক একাউন্ট খুলে রাখে।

গত বছরেরে বার্ষিক হিসাব মতে, ফেসবুকের মোট আইডির শতকরা ৭ ভাগ অর্থাৎ ৭ কোটি ৬০ লক্ষ একাউন্ট ভুয়া। ফেসবুক কোম্পানি ৩ ধরণের ভুয়া আইডি সনাক্ত করেছে তার মধ্যে একটি হল ডুপ্লিকেট একাউন্ট, অশ্রেণিভুক্ত একাউন্ট এবং অবাঞ্চিত একাউন্ট- এই তথ্য প্রকাশ করেন ইউএস সিকিউরিটি এবং একচেঞ্জ কমিশন যা এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়।

ডুপ্লিকেট একাউন্ট বা অনুরূপ একাউন্ট এর সংখ্যা ৫ কোটি ৩০ লাখ যা মোট ফেসবুক একাউন্টের ৫ শতাংশ। একজন ব্যবহারকারী তার মেইন আইডির পাশাপাশি এসব আইডি চালায়।

আর এক প্রকার একাউন্ট আছে যা কোন ব্যক্তির নামে নয় প্রিয় প্রাণী বা কোম্পানির নামে খোলা হয় এরকম আইডিকে অশ্রেণিখুক্ত ধরা হয়েছে। এদের আইডির সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখ যা মোট ফেসবুক একাউন্টের ১.৩ শতক।

এসব বাদেও আবার আরো ৯৫ লাখ অবাঞ্চিত একাউন্ট যা মোট ফেসবুক একাউন্টের ০.৯ শতক, এসব অবাঞ্চিত একাউন্ট মূলত স্প্যামিং করার জন্য খোলা হয়।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানান, তারা ভুলা বা ডুপ্লিকেট আইডি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এবং নীতিমালা আরো শক্তিশালী করছে।

ফেসবুক পলিসি বিরোধী ভুয়া নাম যাতে ব্যবহার না করে সে জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। সবাইকে উৎসাহ করছে কেউ ভুয়া নাম ব্যবহার করলে তা রিপোর্ট করার জন্য। কোনোভাবে যদি প্রমাণ হয় যে ফেক নাম বা তথ্য আছে তাহলে আইডিটি ব্লক করে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ফেসবুকের ব্যবহারকারী ছিল ৩৩ লাখ ৫২ হাজার ৬৮০ জন। এ হিসাব অনুযায়ী গত দুই মাসের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৪ মাসে এই সংখ্যা ৮০ লাখে পৌঁছাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top