দেশে মোবাইল টাওয়ার ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে আশঙ্কাজনক হারে সুন্দরবনে মৌমাছি কমে যাচ্ছে। টাওয়ারের থেকে তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণের কারণে মৌমাছিরা বিপদে পড়ে। মৌচাক থেকে উড়ে যাওয়ার সময় নিজেদের রেখে যাওয়া দিক নির্দেশনাও হারিয়ে ফেলে। মৌচাকে একসঙ্গে বহুসংখ্যক মৌমাছি বাস করে। বনের আশপাশে সৃষ্ট তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রের কারণে মৌমাছি ফিরে আসতে পারে না, পথ ভুলে যায়। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি মৌমাছির উপর গবেষণা করতে গিয়ে জানতে পারেন, আজকাল সুন্দরবনের বাইরের দিকের গাছগুলোতে আগের হারে মৌচাক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মৌয়ালদের বনের অনেক ভেতরে গিয়ে মধু সংগ্রহ করতে হয়। কারণ মৌমাছি নিজেদের মৌচাকে সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ার ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে বলেই বাইরের দিকের গাছগুলোতে আর চাক বাঁধে না।
এর প্রধান কারণ সুন্দরবনের আশেপাশের মোবাইল টাওয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি। আর মৌমাছি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঘুরে জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত।
ফুল ফোটার সময়ের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন এলাকায় যায়, আবার নির্দিষ্ট ঋতুতে ফিরে আসে।
কিন্তু যখন আসার পথে আসে, তখন তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাবে পথ হারিয়ে মৌচাক খুঁজে পায় না, যা তাদের জীবনধারণের জন্য বড় হুমকি।
তাছাড়াও আজকাল নগরায়ণের অনেক পরিকল্পনাই মৌমাছির জীবনের অন্তরায়। পুরো দেশজুড়ে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য হোক আর রাস্তা টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই হোক, সরকার ইউক্যালিপ্টাস বা অ্যাকাসিয়া গাছ রোপণ করেছে।
এটিও মৌমাছির জীবনকে সহজতর করতে সহায়তা করেনি। শুধু ‘অ্যাকসিয়া বেলজিয়াম’ প্রজাতির পরিবর্তে যদি ‘অ্যাকাসিয়া মেলিফেরাস’ আমদানি করা হতো, তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো মৌমাছির সবচেয়ে পছন্দের গাছ হতো এটিই।
একই সঙ্গে বিশ্ব জনপ্রিয় অ্যাকাসিয়া মেলিফেরাস মধুর মতোই আমাদের দেশে ওই মধু জনপ্রিয় হয়ে যেত। এখন এই ইউক্যালিপ্টাস গাছের অনেক পরিবেশজনিত সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রথম থেকেই গাছটি পছন্দ করার পেছনে বন বিভাগসহ সব উন্নয়ন সংস্থা জ্বালানি পাওয়ার ব্যাপারটিকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে।
তখন যদি মৌমাছির বিয়য়টিও মাথায় রাখত, তবে আজ মধু রপ্তানির কথা ভাবতে পারত।
এই একটি দিক থেকে বাংলাদেশ কয়েক কোটি টাকা উপার্জন করতে পারত বলে জানান গবেষক হোসেন।
তবে সবচেয়ে মারাত্মক মোবাইল টাওয়ারের কারণে মৌমাছির প্রজনন ক্ষমতা হারানো। ২১ দিনের লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াতে ভাঙন দেখা যায়।
কারণ স্ত্রী বা রানী মৌমাছির ডিম পরিস্ফুটনে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে আগের তুলনায়।
আগে মফস্বল শহরগুলোতে বাড়ি বা বড় গাছে মৌচাক দেখা যেত, তার সংখ্যাও কমে এসেছে।
মোবাইল টাওয়ারের যে বিকিরণটা হয় তা থেকে মৌচাক কোনোভাবেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎপাদনক্ষম অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে না।
রানী মৌমাছি সাধারণ সময়ের থেকে বেশি সময় নিচ্ছে। এই ফলাফলটি বেশি চোখে পড়েছে মোবাইল ফোন টাওয়ারের আশেপাশের অঞ্চলে।
আবার পরোক্ষভাবে, কৃষিজমিতে মোবাইল টাওয়ার বসানোর কারণে ফসলে কমে যাচ্ছে ফুল। তাই মৌমাছি তা থেকেও মধু আহরণে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
একই সঙ্গে পরাগায়ণে প্রধান সাহায্যকারী পতঙ্গ মৌমাছি বিলুপ্ত হলে কৃষিক্ষেত্র ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে।
এদিকে আন্তর্জাতিক কলেরা গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. মুনিরুল আলম বলেন, বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন টাওয়ার না স্থাপন করে যদি একটি সাধারণ
টাওয়ার ব্যবহারের পদ্ধতি বেছে নিতো, তবে সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল স্থানগুলোতে টাওয়ারের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারত।
তিনি আরও বলেন, দূষণের এই রূপটির কথা আমরা খুব বেশি জানি না। তাই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি সচেতন নই।
খুব দ্রুত যদি মোবাইল টাওয়ারের থেকে নিঃসরিত বিকিরণের ব্যাপারে আইনি বাধ্যবাধকতা না আনা হয়, তবে মৌমাছিসহ অনেক জীববৈচিত্র্য আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের ভেতরে টাওয়ার রয়েছে গ্রামীণফোনের ১০টি, বাংলালিংকের ৩টি আর সাতক্ষীরা ও খুলনায় সবমিলিয়ে ৬৭টি।
তিনি মৌমাছির উপর গবেষণা করতে গিয়ে জানতে পারেন, আজকাল সুন্দরবনের বাইরের দিকের গাছগুলোতে আগের হারে মৌচাক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মৌয়ালদের বনের অনেক ভেতরে গিয়ে মধু সংগ্রহ করতে হয়। কারণ মৌমাছি নিজেদের মৌচাকে সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ার ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে বলেই বাইরের দিকের গাছগুলোতে আর চাক বাঁধে না।
এর প্রধান কারণ সুন্দরবনের আশেপাশের মোবাইল টাওয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি। আর মৌমাছি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঘুরে জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত।
ফুল ফোটার সময়ের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন এলাকায় যায়, আবার নির্দিষ্ট ঋতুতে ফিরে আসে।
কিন্তু যখন আসার পথে আসে, তখন তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাবে পথ হারিয়ে মৌচাক খুঁজে পায় না, যা তাদের জীবনধারণের জন্য বড় হুমকি।
তাছাড়াও আজকাল নগরায়ণের অনেক পরিকল্পনাই মৌমাছির জীবনের অন্তরায়। পুরো দেশজুড়ে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য হোক আর রাস্তা টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই হোক, সরকার ইউক্যালিপ্টাস বা অ্যাকাসিয়া গাছ রোপণ করেছে।
এটিও মৌমাছির জীবনকে সহজতর করতে সহায়তা করেনি। শুধু ‘অ্যাকসিয়া বেলজিয়াম’ প্রজাতির পরিবর্তে যদি ‘অ্যাকাসিয়া মেলিফেরাস’ আমদানি করা হতো, তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো মৌমাছির সবচেয়ে পছন্দের গাছ হতো এটিই।
একই সঙ্গে বিশ্ব জনপ্রিয় অ্যাকাসিয়া মেলিফেরাস মধুর মতোই আমাদের দেশে ওই মধু জনপ্রিয় হয়ে যেত। এখন এই ইউক্যালিপ্টাস গাছের অনেক পরিবেশজনিত সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রথম থেকেই গাছটি পছন্দ করার পেছনে বন বিভাগসহ সব উন্নয়ন সংস্থা জ্বালানি পাওয়ার ব্যাপারটিকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে।
তখন যদি মৌমাছির বিয়য়টিও মাথায় রাখত, তবে আজ মধু রপ্তানির কথা ভাবতে পারত।
এই একটি দিক থেকে বাংলাদেশ কয়েক কোটি টাকা উপার্জন করতে পারত বলে জানান গবেষক হোসেন।
তবে সবচেয়ে মারাত্মক মোবাইল টাওয়ারের কারণে মৌমাছির প্রজনন ক্ষমতা হারানো। ২১ দিনের লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াতে ভাঙন দেখা যায়।
কারণ স্ত্রী বা রানী মৌমাছির ডিম পরিস্ফুটনে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে আগের তুলনায়।
আগে মফস্বল শহরগুলোতে বাড়ি বা বড় গাছে মৌচাক দেখা যেত, তার সংখ্যাও কমে এসেছে।
মোবাইল টাওয়ারের যে বিকিরণটা হয় তা থেকে মৌচাক কোনোভাবেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎপাদনক্ষম অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে না।
রানী মৌমাছি সাধারণ সময়ের থেকে বেশি সময় নিচ্ছে। এই ফলাফলটি বেশি চোখে পড়েছে মোবাইল ফোন টাওয়ারের আশেপাশের অঞ্চলে।
আবার পরোক্ষভাবে, কৃষিজমিতে মোবাইল টাওয়ার বসানোর কারণে ফসলে কমে যাচ্ছে ফুল। তাই মৌমাছি তা থেকেও মধু আহরণে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
একই সঙ্গে পরাগায়ণে প্রধান সাহায্যকারী পতঙ্গ মৌমাছি বিলুপ্ত হলে কৃষিক্ষেত্র ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে।
এদিকে আন্তর্জাতিক কলেরা গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. মুনিরুল আলম বলেন, বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন টাওয়ার না স্থাপন করে যদি একটি সাধারণ
টাওয়ার ব্যবহারের পদ্ধতি বেছে নিতো, তবে সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল স্থানগুলোতে টাওয়ারের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারত।
তিনি আরও বলেন, দূষণের এই রূপটির কথা আমরা খুব বেশি জানি না। তাই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি সচেতন নই।
খুব দ্রুত যদি মোবাইল টাওয়ারের থেকে নিঃসরিত বিকিরণের ব্যাপারে আইনি বাধ্যবাধকতা না আনা হয়, তবে মৌমাছিসহ অনেক জীববৈচিত্র্য আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের ভেতরে টাওয়ার রয়েছে গ্রামীণফোনের ১০টি, বাংলালিংকের ৩টি আর সাতক্ষীরা ও খুলনায় সবমিলিয়ে ৬৭টি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন