GuidePedia

0
চিন্তা করুন একটি ঘটনা। অসাবধানতাবশত আপনার সেলফোনটি হাত থেকে পড়ে গেল। সাধের সেটটা বুঝি ভেঙে টুকরো টুকরো! এরকম যখন ভাবছেন ঠিক তখনোই ঘটলো খুব অদ্ভুত এক ঘটনা। ফোনটি মাটিতে পড়ার পর ভেঙ্গে না গিয়ে বরং বাউন্স করে লাফিয়ে উঠলো! স্বচ্ছ আর বাঁকানো বৈদ্যুতিক যন্ত্র এখন আর কোন কল্পবিজ্ঞানের কথা নয়। খুব শীঘ্রই তা বাস্তব আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।অস্ট্রেলিয়ার RMIT Universityর ফাংশনাল ম্যাটরিয়ালস ও মাইক্রোসিস্টেমস-এর গবেষকরা স্বচ্ছ ও বাঁকানো সম্ভব এরকম মুঠোফোন তৈরির জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যার মাধ্যমে ইলেকট্রনিকস আর বিভিন্ন সুবিধার সমন্বয় ঘটানো সম্ভব হবে। আর বিশেষ এই যন্ত্র(মুঠোফোন) তৈরি হবে একটি নমনীয় তলের উপর সিলিকনের কঠিন আবরণ দিয়ে।

মাইক্রো ও ন্যানো প্রযুক্তির বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো শক্তিকে উৎপাদন, সেটিকে কাজে লাগানো ও কাজ শেষে শক্তিকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে সক্ষম। আর এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে আমাদের চুলের একশ ভাগের এক ভাগের চেয়েও পাতলা অক্সাইডযুক্ত পদার্থের স্বচ্ছ ন্যানো-স্তর বা ন্যানো লেয়ারের মাধ্যমে। এই অক্সাইডযুক্ত পদার্থগুলো খুবই ভঙ্গুর প্রকৃতির ও উচ্চ তাপধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। কখনো কখনো তা ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে যায়। যেকারণে এতদিন পর্যন্ত এদেরকে কোন নমনীয় বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা যায় নি।
পি এইচ ডি গবেষক ও এই গবেষণাপত্রের মূল লেখক ফিলিপ গাটরাফ বলেন, নতুন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষুদ্র পদার্থ কণা ব্যবহার করে নমনীয় বৈদ্যুতিক সামগ্রী তৈরি করা যেতে। আর এগুলোর কাজ করার ক্ষমতা হবে পূর্ণমাত্রায়। আর বিশেষভাবে তৈরি এসব যন্ত্রে ব্যবহার করা হবে অতি ক্ষুদ্র আকৃতির অক্সাইডযুক্ত পদার্থের প্লেট বা পাত। এই প্লেটগুলোকে একটির উপর আরেকটি রেখে এমনভাবে সজ্জিত করা হবে যাতে যন্ত্রগুলোর ভেতরের চাপ কমে যায় ও সেগুলো খুব সহজেই তাপ ও বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে। নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন নমনীয় বৈদ্যুতিক যন্ত্রে অক্সাইডযুক্ত পদার্থ ব্যবহারে যে সমস্যা ছিল সেটির সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে। গবেষকরা আশা করছেন, এর মাধ্যমে এখন মুঠোফোনসহ এমন সব বৈদ্যুতিকযন্ত্র তৈরি করা সম্ভব হবে যেগুলো ভাঙ্গবে না, বাঁকিয়ে গিয়ে আবার সোজা হয়ে যাবে, ঠিক রাবারের মতোই!

গবেষকদলের সহ-প্রধান ড. মধু ভাস্কারন জানান, নতুন এই প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহণে সক্ষম স্বচ্ছ ইনডিয়াম টিন অক্সাইড ও রাবার সদৃশ সিলিকন ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আর বলেন, নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা বিভিন্ন যন্ত্রগুলো চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন স্নায়ু কোষ ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গ পর্যবেক্ষণের কাজে। এই গবেষকদলের আরেক সহ-প্রধান ড. শরৎ শ্রীরামের এই সংক্রান্ত গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘নেচার’ এর প্রকাশনা গ্রুপ ‘এশিয়া ম্যাটেরিয়ালস’ এ প্রকাশিত হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top