GuidePedia

0
যে গাছে স্বর্ণ ধরে!
বাংলায় একটা কথা আমরা প্রায়ই বলি, “টাকা কি গাছে ধরে?” বেশ, টাকা গাছে ধরে না, তবে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, কিছু গাছের পাতাতে স্বর্ণের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে! অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, একটি ইউক্যালিপটাস গাছের পাতাতে প্রাপ্ত স্বর্ণকণার উপস্থিতি থেকে বোঝা যায় গাছটির ঠিক নিচেই মাটির গভীরে স্বর্ণের অস্তিত্ব আছে। তারা আরো বলেন, এই আবিষ্কারের ফলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন দুর্গম জায়গায় মূল্যবান ধাতুর উপস্থিতি আছে কিনা সেটি জানার এ

কটি বিকল্প উপায় পাওয়া গেল।Australia’s Commonwealth Scientific and Industrial Research Organisation (CSIRO)র ভূ-রসায়নবিদ(জিওকেমিস্ট) ড. মেল লিন্টার্ন বলেন, এতদিন অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মূল্যবান ধাতুর খনির অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এরকম অনেক স্থান আছে যেগুলোতে ধারণা করা হয় বিভিন্ন খনিজ পদার্থের অস্তিত্ব আছে, কিন্তু সেগুলো এতটাই দুর্গম যে সেখানে খননকাজ চালানো সম্ভব হয় না। গাছের পাতাতে যদি এরকম মূল্যবান খনিজ ধাতুকণার অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তবে খননকাজ ছাড়াই সেই এলাকার মাটির গভীরে কোন ধাতু উপস্থিত আছে সেটা জানা যাবে।
গবেষকরা জানান, ইউক্যালিপটাস গাছের চারপাশে থাকা মাটিতে স্বর্ণের অস্তিত্ব আছে। আর গাছগুলো অন্যান্য উপাদানের সাথে মাটি থেকে এই স্বর্ণকণা গুলোও শুষে নেয়। তারা মাটির নিচে ধাতু খোঁজার জন্য ব্যবহৃত ‘অস্ট্রেলিয়ান সিঙ্কোট্রন’ নামে একটি যন্ত্রের সাহায্যে দেখতে পান যে, কিছু গাছের পাতা, শাখা-প্রশাখা ও বাকলে সামান্য পরিমাণে স্বর্ণের অস্তিত্ব রয়েছে। এই স্বর্ণ নিয়ে আঙটি বানাতে গেলে কোন সোনার খনির উপর ৫০০টি গাছ লাগাতে হবে, যারা মাটি থেকে স্বর্ণ শুষে নিতে সক্ষম। যাই হোক, আশার কথা হচ্ছে এই আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হচ্ছে, গাছের নিচে মাটির প্রায় ৩০ মিটার বা ১০০ ফুট গভীরে স্বর্ণের বেশ বড় খনি রয়েছে।

গবেষকদের মতে, গাছেরা অনেকটা হাইড্রোলিক পাম্পের মত কাজ করে। তারা মাটি থেকে পানি ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ শুষে নেয়। আর এভাবেই পানির সাথে মিশে থাকা স্বর্ণকণাগুলো গাছের পাতায় চলে আসে। বর্তমানে বিভিন্ন ধাতু অনুসন্ধান ও খনি থেকে সেগুলো উত্তোলনের জন্য বেশ জটিল সব পদ্ধতি ও ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নতুন এই আবিষ্কার হয়তো মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা স্বর্ণ অনুসন্ধানের জন্য খুব ভাল একটি উপায় হবে।
এছাড়া এতে যেমন বিভিন্ন ধাতুর অস্তিত্ব নির্ণয়ের জন্য খরচ অনেক কমে আসবে, আবার এর পরিবেশগত ক্ষতিও নেই বললেই চলে। কারণ গবেষকরা তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গাছ ও এর আশেপাশে মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খুব সামান্য পরিমাণে পাতা, শাখা-প্রশাখা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। আর এই পদ্ধতিতে শুধু স্বর্ণই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে থাকা লোহা, তামা ও সীসার অস্তিত্বও নির্ণয় করা সম্ভব হবে।

সূত্রঃ বিবিসি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top