GuidePedia

0
ছবির নাম গুন্ডে৷ থাকছে আস্ত একখানা বাংলা গান৷ গৌতম-সুস্মিতের লিরিকে সে গান গেয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি আর মোনালি ঠাকুর৷


নিলি এমন এন্ট্রি আরে/ বাজলো ঘণ্টি মনের তারে/ ও সোনা ও সোনা ও সোনা.../ মন শোনায় কমেন্ট্রি আরে/ প্রেমেরই গ্যারান্টি আরে/ আয়না করি ফস্টি-নস্টি/ দেখতে নোনতা খেতে মিস্টি...


ভাবছেন নতুন কোনও বাংলা ছবির গান? এক্কেবারে ভুল৷ যশরাজ ফিল্মসের নতুন বিগ বাজেট হিন্দি ছবি গুণ্ডে-র গান এটা৷


হিন্দি ছবিতে আস্ত একখানা বাংলা গান! অর্জুন কাপুর, রণবীর সিং আর প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার লিপে শোনা যাবে৷ গেয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি আর মোনালি ঠাকুর৷ গৌতম-সুস্মিতের কথায় সুর দিয়েছেন এক থা টাইগার-এর সুরকার সোহেল সেন৷


আসলে, একটা আফশোস কয়েক বছর ধরেই জমা হচ্ছিল বাঙালির মনে৷ মুম্বাইয়ে বাঙালি চিত্রপরিচালকদের জয়জয়কার৷ বার বার মুম্বাইয়ের ক্যামেরা ঘুরে যাচ্ছে কলকাতায়৷ বাঙালি সঙ্গীত পরিচালকদের দাপটও নতুন করে বেড়েছে মুম্বাইয়ে৷ গাইছেন বাঙালি গায়ক-গায়িকারা৷ কিন্ত্ত হিন্দি ছবিতে বাংলা গান কেন শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না!


কী হল, উল্টো যুক্তি খুঁজছেন? ভাবছেন বাংলা গান হিন্দি ছবিতে কেন থাকবে? কেন, হিন্দি ছবিতে পাঞ্জাবি ভাংড়া চলছে না? ইউপি, বিহারের ভোজপুরি নওটঙ্কির ফেভিকল ঝান্ডু বাম-ও তো দিব্যি চলছে! রহমান সাহেবের কল্যাণে হিন্দি গানে যখন তামিল শব্দমালা থাকে, তখন তো তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না৷ রজনীকান্তের ফ্যান হলে যে তালাইভা বলে লাফিয়ে উঠতে হবে সেটা তো আগে জানাই ছিল না৷ তাহলে বাংলা গানই বা থাকবে না কেন? এই যুক্তি-তক্কের গপ্পো এ বার অবসান ঘটতে চলেছে৷


বহুকাল আগে কিছু গানে বাংলা শব্দের আনাগোনা ঘটেছিল বটে৷ যেমন, পান্তাভাতে টাটকা বেগুনপোড়া কিংবা বাঙ্গালিমে কহেতি হ্যায়, আমি তোমাকে ভালোবাসি ইত্যাদি৷ তারপর আর তেমনটা বিশেষ হয়নি৷ গত দুতিন বছরে আবার একটা ট্রেন্ড এসেছে৷ হিন্দি গানে আসছে বাংলা শব্দ৷ যেমন ভুলভুলাইয়াতে শোনা গিয়েছে আমি যে তোমার, লুটেরাতে শোনা গিয়েছে কেমন বোকা মনটারে, ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানিতে ছিল আলুভাত, মুড়িভাত,কাহিনিতে অমিতাভ বচ্চনের গলায় যদি তোর ডাক পুরোটাই শোনা গিয়েছে৷ তবে রবীন্দ্রনাথের গান তো ক্ল্যাসিক! কারণ গুন্ডেতে এই গানের লিরিক যেকোনো বাংলা বাণিজ্যিক ছবির মতোই৷


ব্যাপারটা সম্পর্কে বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত বাপ্পি লাহিড়ি৷ স্বভাবসিদ্ধ বাহূল্যে বলছেন, আমি ভীষণ আনন্দিত৷ একটুও বাড়িয়ে বলছি না, কিন্ত্ত একটা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটতে চলেছে৷ ভাবুন বম্বের সবচেয়ে বড় ব্যানারের ছবি আর তাতে আস্ত একখানা বাংলা গান! ছবির পরিচালক আলি (আব্বাস জাফর) প্রস্তাবটা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যাই৷ কেবল গেয়েই গা বাঁচাইনি, কেমনভাবে হলে শুনতে আরও ভালো লাগতে পারে তা নিয়ে সুরকার সোহেলকে (সেন) পরামর্শও দিয়েছি৷ আমি নিজে গৌতম সুস্মিতকে ফোন করে লিরিক লিখে দেয়ার জন্য বলি৷ মোটের ওপর এই গানটায় নিজেও ইনভলভড হয়ে পড়েছি৷


সাম্প্রতিক সময়ে সুরকার হিসেবে নয়, গায়ক হিসেবেই নতুন করে পাওয়া যাচ্ছে বাপ্পিকে৷ ডার্টি পিকচার-এর উলালা উলালা  তো সুপারহিট৷ তাছাড়া জলি এলএলবি, স্পেশাল ছাব্বিশএও তার গাওয়া গান শোনা গিয়েছে৷ সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ওয়ার ছোড় না ইয়ার কিংবা মুক্তি আসন্ন লোফার,তামাঞ্চে ছবিতেও গেয়েছেন৷ এবার এই বাংলা গান৷ তাহলে কি বাঙালি গায়ক হিসেবেই নতুন ইনিংস তার?


বাপ্পি বলেন, অতকিছু ভাবছি না৷ মানুষ আমার গলা পছন্দ করছেন৷ শুনতে চাইছেন৷ সে জন্যই গাইছি৷ আর হিন্দি ছবিতে বাংলা গান গাওয়ার সৌভাগ্য হচ্ছে বলে আলাদা একটা আনন্দ তো অবশ্যই হচ্ছে৷


পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, প্রেম আমার-এর মতো বহু হিট বাংলা সিনেমায় লিরিক লিখেছেন গৌতম-সুস্মিত৷ সাম্প্রতিক খোকা ৪২০ ছবির জন্য তার লেখা ম্যাড আই অ্যাম ম্যাড-ও সুপারহিট৷ সেই তিনিই গানটির লিরিসিস্ট৷ বললেন, এর আগে পোক্কিসম নামে একটা তামিল ছবির জন্য বাংলা গান লিখেছিলাম৷ এবার হিন্দি ছবির জন্য বাংলা গান লিখে অবশ্যই খুব আনন্দ হচ্ছে৷ বাপ্পিদাই আমায় গানের কথা লিখতে বলেন৷ ছবি করিয়েদের তরফে আমাকে বলা হয়েছিল এটা কোনো সফট রোম্যান্টিক গান নয়৷ একটা মাস্তানি চাল থাকবে গানের চলনে৷ সেটা মাথায় রেখেই কথা লিখেছি৷


এতদিন নানা সময়ে কলকাতা ও রাণীগঞ্জে গুন্ডের শ্যুটিং নিয়ে কলকাতাবাসী উতৎসুক ছিলেন৷ এবার অপেক্ষা গানটার! সূত্র: ওয়েবসাইট।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top