GuidePedia

0

খালি বাড়ি ফেলে দূরে কোথাও যেতে অনাহূত আগন্তুক আর নিশি কুটুমের উপদ্রবের কথা এখন থেকে না ভাবলেও চলবে। আর গভীর রাতে ঘরের ভেতরে থেকে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের একটু নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য হলে তো কথাই নেই। আপনার ঘরের দরজায় গোপনে লুকিয়ে রাখা অতি সংবেদনশীল এক যন্ত্র সয়ংক্রিয়ভাবে আপনার কাছে থাকা মোবাইল ফোনে পৌঁছে দেবে অনাহূতদের আগমন বার্তা। চাইলে তাদের ছবিও দেখা যাবে মুঠোফোনে। জরুরি এবং ছোট এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন বাগেরহাটের মেধাবী ছাত্র অমিত দাশ (১৯)।


বাগেরহাট শহরের দাসপাড়া এলাকার মৃত অমল দাশের ছেলে অমিত খুলনা সিটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের তড়িত্ প্রকৌশল বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে তার এই উদ্ভাবন সম্পর্কে জানান। অমিত দাবি করেন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তিনি একাই এ ধরনের যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন।

অমিত বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালিয়ে তিনি এই বিশেষ যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন। এর আগে তিনি মেকানিক্যাল পদ্ধতিতে এই যন্ত্র চালু করতে পেরেছিলেন। তবে ঐ পদ্ধতিতে বিভিন্ন জটিলতার কারণে তিনি ইলেক্ট্রিক্যাল পদ্ধতিতে যন্ত্রটি তৈরি করার চেষ্টা করে সফল হন। এই যন্ত্রটিতে রয়েছে স্বয়ক্রিয় ফোন করার ব্যবস্থা, ভিডিও এবং ওয়েব ক্যাম, স্বয়ক্রিয় সতর্কীকরণ ঘন্টা (এলার্ম) ও আলো ব্যবহারের সুবিধা। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে যন্ত্রটির কেসিং ছোট করে এবং আকর্ষণীয় রূপ দিয়ে অত্যন্ত সাশ্রয়ী দামে বাজারজাত করা সম্ভব।

তিনি বলেন, এই যন্ত্রের ভেতরে সিম কার্ডসহ একটি ক্যামেরা সংযুক্ত মোবাইল ফোন রয়েছে। ঐ মোবাইল ফোনের সিমের সাথে গৃহকর্তার মোবাইলের সিমের নম্বর ম্যাচ করা থাকবে। দরজা বা বাড়ির যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বা দুর্বল জায়গায় গোপনে লুকিয়ে রাখা যন্ত্রটি অতি সংবেদনশীল সেন্সরের মাধ্যমে অনাহূত আগন্তুকের ছায়া ধরে নেবে এবং সাথে সাথে স্বনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় মালিকের মোবাইল ফোনে নম্বরে সংকেত পাঠিয়ে দেবে। এর ফলে মালিকের মোবাইল ফোনে রিংটোন সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং তিনি তার বাড়িতে অনাহূত উপস্থিতির বিষয়ে জানতে পারবেন।

গতিশীল যে কোন ছায়া সেন্সরে ধারণ হয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে কি না জানতে চাইলে অমিত বলেন, বিষয়টি নির্ভর করে বাড়ির কোথায় এবং কত উচ্চতায় মোবাইল ফোনটি স্থাপন করা হবে তার ওপর। তাছাড়া ওয়েব ক্যাম বা ভিডিও ক্যাম সংযুক্ত থাকলে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ থাকে না।

অমিতের মা পূরবী দাশ জানান, অমিত ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ভাবনের বিষয়ে আগ্রহী। ২০১০ সালে বাগেরহাট টেকনিক্যাল স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে সে ৩০তম জেলা বিজ্ঞান মেলায় ‘টাচ সিকিউরিটি সিস্টেম’ ও ‘ফ্লাড সিকিউরিটি সিস্টেম’ নামে দুটি ছোট উদ্ভাবন প্রদর্শন করে প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top