GuidePedia

0
পৃথিবীতে মানুষের আগমনের নতুন গবেষণা
আমেরিকার এক গবেষকের লেখা বইয়ের বিষয়বস্তু আমাদের চিন্তার নিউরনে ঝঙ্কার ফেলতে পারে। গবেষকের নাম এলিস সিলভার। তার নতুন বই 'হিউম্যানস আর নট ফ্রম আর্থ : আ সায়েন্টিফিক ইভোলিউশন অফ দ্য এভিডেন্স' এই বইতে তিনি দাবি করেছেন যে, মানুষ এই পৃথিবীর জীবই নয়। ভিন গ্রহের প্রাণী। বহু বছর আগে ভিন গ্রহের কিছু প্রাণী পৃথিবীতে এসেছিল। তাদের সঙ্গেই নাকি পৃথিবীতে আসে মানুষ। কয়েকজন মানুষকে এ গ্রহে রেখে বাকিরা ফিরে গেছেন নিজেদের গ্রহে।

কেমন কল্পবিজ্ঞানের মতো শোনাচ্ছে। পৃথিবীতে প্রাণের আগমন তথা মানুষের আগমন নিয়ে বৈজ্ঞানিরা নানা সময় নানা মতবাদ দিয়েছেন। যেমন কিছু আগে আমরা শুনেছি মানুষও এলিয়ান, অর্থাত্ ভিন গ্রহের প্রাণী। এই অর্থে যে, মহাকাশ থেকে এই পৃথিবীতে অণুজীব এসেছে উল্কাপাত বা ধূমকেতু দ্বারা বাহিত হয়ে। সেই অণুজীবের বিবর্তনধারায় ফলাফল বিচিত্র প্রাণীর মেলা। স্তন্যপায়ী প্রাণী তথা মানুষও সেই উত্স থেকেই সৃষ্ট। সুতরাং মানুষও এক অর্থে এলিয়ান। কিন্তু এলিস সিলভার বলেছেন অন্যভাবে। তার ব্যাখ্যা আরও চমকপ্রদ। তার গবেষণাগ্রন্থ বলছে কোনো বিবর্তনের ফসল নয় মানুষ। মানুষ আসলে এই গ্রহের প্রাণীই নয়। মানুষকে এই পৃথিবীতে রেখে গেছে ভিন গ্রহের কিছু প্রাণী। এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে এলিস বলেছেন, মানুষ এসেছে কম মাধ্যাকর্ষণ শক্তিবিশিষ্ট কোনো গ্রহ থেকে। সে কারণে পৃথিবীর বেশি মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না তারা। অধিকাংশ মানুষই তাই পিঠ ও কোমর ব্যথায় কাবু। তার কথায়, 'ভিন গ্রহের উন্নত প্রজাতিকে পৃথিবীতে আনা হয়েছিল, তাই মানুষই এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত জীব। কিন্তু পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি তারা। সূর্যের আলোয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রকৃতির বুকে স্বাভাবিকভাবে যে সমস্ত খাবার-দাবার পাওয়া যায়, তা মানুষের পছন্দ হয় না। খুব সহজেই ক্রনিক রোগে আক্রান্তও হয়ে পড়ে মানুষ।' এ প্রসঙ্গে আরও বিচিত্র সব উদহারণের অবতারণ করেছেন এলিস। যেমন মানবশিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তার কথায়, মানব শিশুর জন্মের সময় মাথাটা এতই বড় হয়, যে অনেক সময় মায়েদের প্রসবকালীন বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। কখনও আবার মায়ের ও শিশুর প্রাণহানিও ঘটে থাকে। এলিস মনে করেন, পৃথিবীর আর কোনো প্রজাতির প্রাণীর ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা দেখা যায় না। টিকটিকির মতো বেশ কিছু সরীসৃপ দিনের পর দিন রোদে থাকলেও তাদের ত্বকে কোনও ক্ষতি হয় না। অথচ মানুষ কয়েক দিন টানা 'সানবাথ' করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার ত্বকে সমস্যা দেখা দেয়। এলিসের দাবি, ভিন গ্রহের প্রাণী বলেই পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে তারা মানিয়ে নিতে পারে না। দেখা দেয় সমস্যা। এমনকি মানুষের শরীর ঘড়ি দিনে ২৫ ঘণ্টার ভিত্তিতে তৈরি। পৃথিবীর ২৪ ঘণ্টার সময়ের হিসেবের সঙ্গে তা মেলে না বলেই প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ে মানুষ। এলিসের মতে মানবজাতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। এখন প্রশ্ন হলো—'উন্নত প্রজাতি'র মানুষকে তবে হঠাত্ 'কম উন্নত' গ্রহে এনে ছেড়ে দেয়া হল কেন? এলিসের যুক্তি, পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব সম্ভবত দ্বীপান্তরে নির্বাসনের মতো। তার কথায়, 'ভিন গ্রহের প্রাণীদের কাছে পৃথিবী অনেকটা জেলের মতো। প্রকৃতিগতভাবে মানুষ খুবই হিংস্র। তাই সঠিক আচার-আচরণ শিখতেই পৃথিবীতে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাদের।'

এলিসের এসব গবেষণালব্ধ ভাবনা সত্য হোক বা শুধুই কল্পনা হোক, তার অনেক কিছুই মানুষের বেলায় মিলে যায় বটে। এলিস মনে করেন, তার তথ্যকে সামনে রেখে আরও গবেষণা করা হলে এর স্বপক্ষেই আরও অনেক প্রমাণ মিলবে। সেই প্রমাণ পাওয়া যাক বা না যাক, এসব গবেষণাগ্রন্থ সাধারণ মানুষকেও চিন্তাশীল করে বটে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top