এই বর্বরতা বাংলাদেশ বা ভারতের প্রত্যন্ত কোনো গ্রামে ঘটেনি। বরং এমন একটি দেশে ঘটেছে, যারা সারা বিশ্ব শাসন করে, যেখানে সর্বত্র শিক্ষার আলো পৌঁছেছে। ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভেনিয়ার।

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে সানবারিতে একটি বাড়ির পিছন থেকে ৪২ বছরের ট্রয় লাফেরারার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে আঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ মৃতের মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে। সেখান থেকেই পুলিশ মিরান্ডা বার্বর নামে এক কিশোরীর পরিচয় পায়। মিরান্ডাকেই শেষ বারের মতো ফোন করেছিলেন ট্রয়। এর পর পুলিশ মিরান্ডাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অবশেষে ঝুলি থেকে বেড়াল বের করে মিরান্ডা। যা শুনে যে কেউ আঁতকে উঠতে পারেন। মিরান্ডা জানিয়েছে, শুধু ট্রয়কেই নয়। বরং গত ৬ বছরে ট্রয়ের মতো প্রায় ১০০ জনের হত্যা করেছে সে। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেয়া নিজের সাক্ষাত্কারে এমনই জানিয়েছে মিরান্ডা। তবে সংখ্যাটা ঠিক মনে করতে পারল না সে। কারণ ২২টি খুনের পরই মিরান্ডা গণনা বন্ধ করে দেয়। ফলে ঠিক কত জনকে সে খুন করেছে, তা জানা যায়নি। ট্রয় লাফেরারা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানা গিয়েছে যে, হত্যায় তার স্বামীও যুক্ত ছিল। পুলিশ জানায়, “এক সঙ্গে অনেককে হত্যা করার ইচ্ছা ছিল ওই দম্পতির।”
ঘটনার তিন সপ্তাহ আগেই ২২ বছরের এক যুবককে বিয়ে করে মিরান্ডা। এর পরই তারা উত্তর ক্যারোলিনা থেকে পেনসিলভেনিয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মিরান্ডার ২২ বছরের স্বামী ট্রয়কে গাড়িতে আটকে রাখে, তার পর মিরান্ডা তার শরীরে ২০ বার ছুরির কোপ বসায়।
জানা গেছে, ক্রেগ্লিস্ট নামে একটি সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ‘বন্ধুত্ব’-এর জন্য বিজ্ঞাপন দেয় মিরান্ডা। ১০০ ডলারের বিনিমময়ে তার সঙ্গে সেক্স করার ইচ্ছা প্রকাশ করে মিরান্ডা। সেই ফাঁদে পা দিয়েই প্রাণ হারাতে হয় ট্রয়কে।
মিরান্ডা জানায়, “১৩ বছর বয়সে প্রথম খুন করে সে। তখন থেকেই একটি গুপ্ত সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করে।”
গত ৬ বছরে আলাস্কা, টেক্সাস, উত্তর ক্যারোলিনা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় এই খুনগুলি করে সে। পুলিশ সেই সমস্ত অঞ্চলে গিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অপরাধ বিশেষজ্ঞ জ্যাক লেভিন বলেন, “সে একজন সিরিয়াল কিলার। এমন পরিস্থিতিতে সবকিছুই সম্ভব।” তবে তিনি এ-ও বলেন, খুব কম মহিলাই সিরিয়াল কিলার হয়ে থাকেন এবং তারা ছুরি ব্যবহার করেন না। মিরান্ডা ট্রয় হত্যাকাণ্ডে ছুরিই ব্যবহার করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ এখনো মিরান্ডার দাবির সত্যতা যাচাই করেনি। এটাও যাচাই করে দেখা হয়নি যে, মিরান্ডা সত্যিই গুপ্ত সমিতির সঙ্গে জড়িত কী না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন