GuidePedia

0

কয়েক দিন আগেই ঘোষিত হলো চলচ্চিত্র-দুনিয়ার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘অস্কার’৷ তবে বাঘা বাঘা অনেক তারকার ভাগ্যের শিকেতেই জোটেনি এ পুরস্কার৷ চকিতে জেনে নিন তেমন কয়েকজন হলিউল তারকার অস্কার না পাওয়ার বেদনাময় কাহিনিকতবার যে তাঁরা পকেটের গোপন কুঠুরিতে চিরকুট নিয়ে এসেছেন, যে চিরকুটে লেখা সংক্ষিপ্ত, কিন্তু আবেগ উছলে পড়া প্রতিক্রিয়া৷ কতবার শয়নে-স্বপনে-জাগরণে এই দৃশ্য কল্পনা করেছেন: জাদুকরের টুপির মতো রহস্যময় খামের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে ছোট্ট এক​িট কাগজ৷ আর সেই কাগজ দেখে মঞ্চে ঘোষিত হবে: ‘অ্যান্ড দ্য অস্কার গোজ টু...’ তুমুল করতালির বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তাঁরা ছুটে যাবেন মঞ্চে৷ সোনালি ট্রফিটা হাতে নিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে কাঁপা গলায় বলবেন সেই গোপন চিরকুটে লিখে আনা বক্তব্য...সবার কাছে ধরা দেয় না৷ পেতে রাখা জাল কেটে বেরিয়ে যায় স্বপ্ন নামের অলৌকিক মৎস্যকন্যারা৷ পেতে পেতেও স্বপ্নকে মুঠোবন্দী করতে না পারার যন্ত্রণায় পুড়তে হয় না পাওয়ার বিরাটাকার কুঁজ পিঠে বেঁধে বয়ে চলাদের৷ না পাওয়ার হাহাকার অশ্রুতে অনূদিত হয়ে দুই চোখে ঝরে৷
যেমন ঝরল লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর৷ ২ মার্চ ডলবি থিয়েটারের চোখ-ধাঁধানো মঞ্চে ম্যাথু ম্যাককনাহে যখন হাতে সোনালি ট্রফিটা নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন, ডিক্যাপ্রিও তখন নয়নজলে ভাসছেন৷ অস্কার না জেতার হাহাকারে সবচেয়ে বেশি যে তিনিই পোড়েন৷ এ সময়েরই শুধু নয়, ডিক্যাপ্রিওকে হলিউড-ইতিহাসের সেরা অভিনেতার তালিকায় রাখেন অনেকে৷ অথচ এ পর্যন্ত অস্কার জেতাই হয়নি তাঁর!
এর আগে তিনবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন৷ এবার মনোনয়ন পেয়েছেন দুটি বিভাগে৷ সেরা অভিনেতার পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবে সেরা ছবির বিভাগেও৷ অস্কার-জট খোলার জন্যই জুটি বেঁধেছিলেন মার্টিন স্করসিসের সঙ্গে৷ স্করসিস-ডিক্যাপ্রিও জুটির ছবি নয়টি অস্কার জিতেছে এর আগে৷ কিন্তু না, তাতেও কাজ হলো না৷ এবারও মনোনয়নেই তৃপ্ত থাকতে হলো ডিক্যাপ্রিওকে৷ সেই ১৯৯৪ সালে হোয়াটস ইটিং গিলবার্ট গ্রেপ ছবির জন্য প্রথম মনোনয়ন পেয়েছিলেন৷ অ্যাভিয়েটর ও ব্লাড ডায়মন্ড-এর পর এবার মনোনয়ন পেলেন উলফ অব ওয়াল স্ট্রিট ছবির জন্য৷
হলিউডের বড় তারকাদের মধ্যে অস্কার ট্রফিটতে চুমু এঁকে দেওয়ার সৌভাগ্য আরও অনেকেরই হয়নি৷ যেমন উইল স্মিথ৷ স্মিথের দুঃখটা আরও বেশি এই জন্য যে তিনি গোল্ডেন গ্লোবও জেতেননি! ২০০২ সালে আ​িল এবং ২০০৬ সালে পারসুট অব হ্যাপিনেস ছবির জন্য অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন৷
জুলিয়ান মুরকেও রাখতে হবে সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের তালিকায়৷ কী বর্ণাঢ্য তাঁর ক্যারিয়ার! গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড, এমনকি এমি অ্যাওয়ার্ডও জিতেছেন৷ অথচ চারবার মনোনয়ন পেয়েও কখনো জেতা হয়নি অস্কার৷
বহু আরাধনার পর অস্কার ট্রফিটা এবার হাতে তোলার সৌভাগ্য হয়েছে বটে, তবে জিতেও যেন জেতেননি ব্র্যাড পিট! টুয়েলভ ইয়ারস অ্যা স্লেভ ছবির প্রযোজক সূত্রে সেরা ছবির অস্কার জিতেছেন৷ কিন্তু অভিনেতা হিসেবে জেতা হয়নি কখনোই৷ এমনকি কিউরিয়াস কেস অব বেঞ্জামিন বাটন-এর মতো অবিশ্বাস্য একটা ছবিও অস্কারের শিকে ছেঁড়াতে পারেনি তাঁর জন্য৷
জনি ডেপ, দর্শকদের মন মাতানোর জন্য বিনোদননির্ভর ছবি যেমন করেছেন, করেছেন সিরিয়াস অভিনয়ও৷ কিন্তু দর্শকের মন জিতলেও একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের বিজ্ঞ ভোটারদের মন জিততে পারেননি৷ প্রমাণ? ১২টি পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ডের পাশে অস্কারের খাতায় আস্ত একটা শূন্য! অস্কার না জেতা তারকাদের তালিকায় আছেন অ্যামি অ্যাডামস, হেলেনা বনহাম কার্টার, মিশেল ফাইফারেরাও৷
কবে তাঁদের দুঃখ ঘুচবে, আদৌ ঘুচবে কি না কে জানে৷ তবে সান্ত্বনা খুঁজতে চাইলে ডিক্যাপ্রিও-পিটেরা তাকাতে পারেন কেভিন ও’কনেলের দিকে৷ ১৯৮৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ২০ বার মনোনয়ন পেয়েছেন এই শব্দ-প্রকৌশলী৷ জিততে পারেননি একবারও! কিংবা তঁদের জন্য আশার বাতিঘর হতে পারেন সুরকার ভিক্টর ইয়াং৷ ২১ বারের ব্যর্থ মনোনয়নের পর ২২তম বারে গিয়ে অস্কার জিতেছিলেন ইয়াং!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top