GuidePedia

0

কেউ সত্য না মিথ্যা বলছে, তা নির্ণয়ে অচেতন মনের ভেতর থেকে আসা প্রথম প্রতিক্রিয়াটাকেই গুরুত্ব দিন। মনোবিজ্ঞানের গবেষকেরা বলছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সত্য-মিথ্যা নির্ণয়ে আমাদের মৌল প্রবৃত্তি আমাদের বিচারবুদ্ধির চেয়ে বেশি সঠিক। তবে অচেতন মনের কথা শোনার চর্চা বাড়াতে পারলে এসব বিষয়ে মানুষের সক্ষমতা বাড়তে থাকে। ‘সাইকোলজিকাল সায়েন্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার লেয়ান টেন ব্রিংকে এবং তাঁর সহযোগী মনোবিজ্ঞানীরা এ গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এতে দেখা গেছে, সচেতন চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে বেশির ভাগ সময়ই সত্য-মিথ্যা নির্ণয়ে ব্যর্থ হয়েছেন পরীক্ষণে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকেরা। কিন্তু যখন বিষয়টা নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় নিজের অচেতন মনে যা এসেছে, তাকেই সঠিক বলে ধরে নিয়েছেন, তখন দেখা গেছে তাঁরা মিথ্যা শনাক্তকরণে বেশি সফল হচ্ছেন।

গবেষকেরা এ ঘটনায় অবাক হয়েছেন জানিয়ে লেয়ান টেন ব্রিংকে বলেন, ‘যদি মিথ্যা নির্ণয়ে আমাদের সক্ষমতা সচেতন মনের মধ্যে না থাকে, তাহলে আমরা তা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করে তা কখনোই বের করতে পারব না। তাই আমরা ভাবছি যে অচেতন মনে এ ঘটনার একটা ব্যাখ্যা হতে পারে।’

কেউ সত্য না মিথ্যা বলছে, তা বোঝার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বেশির ভাগ মানুষ বক্তার মুখের ভঙ্গি, বক্তার চেহারায় দুর্বলতার ছাপ আছে কি না বা তিনি অপ্রতিভ হয়ে যাচ্ছেন কি না ইত্যাদি সূত্র ধরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় ভালো ফল পাওয়া যায় না বলে তাঁরা পরীক্ষণে দেখতে পেয়েছেন।

একই সঙ্গে গবেষকেরা লক্ষ করেছেন, শিম্পাঞ্জির মতো স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ‘প্রতারণা’ বা ‘মিথ্যা’র বিষয়টি দ্রুতই বুঝতে পারে এবং এ বিষয়ে সক্ষমতার বিষয়টিকে বিবর্তন বা টিকে থাকার লড়াইয়ে তাদের সাফল্যের একটা বড় কারণ বলে মনে করা হয়।

বিষয়টা পরীক্ষার জন্য গবেষকেরা স্বেচ্ছাসেবকদের একটা চুরির ঘটনার (সাজানো) ভিডিও দেখতে বলেন। ওই ঘটনায় একটা বইয়ের তাক থেকে ১০০ ডলার চুরি হয় এবং সন্দেহভাজন বেশ কিছু মানুষের চলাফেরা ও কর্মকাণ্ড দেখানো হয়। সবাইই বলেন যে তাঁদের কেউই টাকাটা চুরি করেননি। পাত্র-পাত্রীদের মধ্যে কে মিথ্যা বলছেন, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে মাত্র ৪৩ ভাগ ক্ষেত্রে মিথ্যাবাদীদের এবং ৪৮ ভাগ ক্ষেত্রে সত্যবাদীদের চিহ্নিত করতে পেরেছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা।

পরবর্তী আরেকটি পরীক্ষায় ওই চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজনদের এই ছবি দেখানো হয় স্বেচ্ছাসেবকদের। ছবির সঙ্গে ‘সত্ বা অসত্’, ‘সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী’ এমন কিছু শব্দও বলা হয়। আর ছবি ও শব্দ দেখে তাত্ক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে বলা হয় স্বেচ্ছাসেবকদের। দেখা যায়, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জবাব দেওয়ার সময় আগের পরীক্ষার চেয়ে ভালো করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top