.jpeg)
বিহারে শ্বশুরবাড়ির ফটকের বাইরে গত তিন দিন ধরে অনশন করে চলেছেন নতুন বৌ প্রীতিকুমারী।শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশাধিকার এবং স্ত্রীর মর্যাদা আদায়ে তিনি এ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ‘গালফ নিউজ’ জানিয়েছে। এ আন্দোলনে তাকে উৎসাহ দিচ্ছেন স্থানীয় নারী নেত্রীরা। তবে তার স্বামী এবং তার পরিবারের লোকজন তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না বলে রাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
শনিবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিনে এক বিশাল মিছিল নিয়ে বিহারের বেগুসারাই জেলার মাকদামপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির দরজায় এসে পৌঁছান প্রীতিকুমারী । কিন্তু তাকে বৌ হিসেবে বরণ করে নেয়নি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি তারা তাকে বাড়িতে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি। তখন বাড়ির বাইরে বসে অনশন করতে শুরু করেন প্রীতিকুমারী ।
গত বছর ২১ আগস্ট স্কুল শিক্ষক ধীরাজ কুমারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রীতিকুমারীর। কিন্তু ধীরাজ তাকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেননি। তাকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল প্রীতিকুমারীর বাড়ির লোকজন। তিনি বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধোর করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরে তিনি প্রীতিকুমারীকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। কিন্তু বিয়ের পর তিনি নিজের বাড়িতে ফিরে যান। এরপর স্বামীর কাছে বার বার ফোন করেন প্রীতিকুমারী এবং তাকে বাড়িতে তুলে আনার জন্য বহুবার মিনতি করেছিলেন। কিন্তু তার আবেদনে সাড়া দেয়নি ধীরাজ। তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।7kyduvjfশেষে বিহারের এক নারী কমিশন এবং অন্যান্য নারী সংগঠনগুলোর সমর্থন পেয়ে শনিবার লোকজন নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসে হাজির হন প্রীতিকুমারী। তার এই ‘বৌ যাত্রায়’ বিপুল সংখ্যক নারীও অংশ নিয়েছিল। তবে তাকে বৌ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে ধীরাজের বাড়ির লোকেরা। তারা তাকে বাড়িতে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি। তখন দরজার বাইরে বসে অনশন শুরু করেন প্রীতিকুমারী। এখনও তার অনশন চলছে বলে জানা গেছে।
সোমবার জেলার সরকারি কর্মকর্তারা অনশনস্থলে ছুটে যান এবং দু পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের সে চেষ্টা কোনো কাজে আসেনি। নতুন বৌয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া প্রীতিকুমারী স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়ার জন্য সেখানে ছুটে গেছেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও।
মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে প্রীতিকুমারী জানিয়েছেন,‘আমি মরে যাব তারপরও বাবার বাড়িতে ফিরে যাব না। একজন হিন্দু নারীর জীবনে বিয়ে একবারই হয়।’ শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই না পাওয়া পর্যন্ত তিনি অন্ন স্পর্শ করবেন না বলেও জানিয়েছেন।
কিন্তু তার স্বামী ধারাজ কুমার তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে রাজি নন। তিনি বলেন,‘আমাকে ওর সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। আমার অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। মামলাটির এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। আমার কাছে এ বিয়ের কোনো মূল্য নেই।’
প্রসঙ্গত, বিহারে জোরপূর্বক বিয়ের চল রয়েছে। গত বছর এ ধরণের বিয়ের জন্য সবমিলিয়ে ২৫ হাজার ৩৩ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্থানীয় ভাষায় এ বিয়ের নাম ‘পাকাদুয়া বিবাহ’।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.