GuidePedia

0
সহজে তৈরি করুন তিড়িং বিড়িং জাদুর ডিম!
সহজে তৈরি করুন তিড়িং বিড়িং জাদুর ডিম!

বড্ড ঝামেলার একটা জিনিস হলো ডিম। খুব সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয় একে। একটুখানি আঘাত পেলেই ঠুস করে ভেঙ্গে একাকার। কিন্তু ডিম যদি এমন হয় যে তাকে হাত থেকে ফেলে দিলেও সে টেনিস বলের মত লাফিয়ে আবার হাতেই চলে আসবে? হ্যাঁ, এমন একটি ডিম আসলে তৈরি করা যায় সহজেই। আর তৈরি করে ফেলার পরে এই ডিমটাকে নিয়ে আরও বেশ কয়েক ধরণের কসরত করা যায়। ভাবছেন কি করে তৈরি করবেন এই ডিম, জটিল কোনও প্রক্রিয়া বা অজানা কোনও উপাদান লাগবে না তো? নাহ, আপনার রান্নাঘরে থাকা কিছু উপাদান দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারবেন এই ডিম।
যা যা লাগবেঃ
১) ডিম
২) সাদা ভিনেগার
৩) একটা বড় বাটি বা গ্লাস (স্বচ্ছ কাঁচ বা প্লাস্টিক হলে ভালো হয়)
৪) কর্ণ সিরাপ
৫) ফুড কালার

যা করতে হবেঃ
- বাটিতে ডিমটাকে রেখে এর ওপরে এমনভাবে ভিনেগার ঢেলে দিন যাতে ডিমটা পুরোপুরিভাবে ডুবে থাকে। বাটি স্বচ্ছ হলে আপনি দেখতে পাবেন ডিমটাকে ঘিরে বুদবুদ জমা হচ্ছে। এ অবস্থায় বাটিটাকে আলো থেকে দূরে কোথাও রেখে দিন। ভিনেগারের গন্ধ যাতে না ছড়ায় তার জন্য ঢাকনা চাপা দিয়ে রাখতে পারেন।


- ২৪ ঘণ্টা পরে সাবধানে বাটির ভিনেগার পরিবর্তন করে দিন। এবারে ভিনেগারে ডুবানো ডিমসহ বাটিটিকে রেখে দিন ৩-৭ দিন।
- সাত দিন পরে বাটি থেকে ডিমটা সাবধানে উঠিয়ে পানিতে ধুয়ে নিন। ডিমের ওপরে সাদা একটি নরম স্তর পাবেন যা আঙ্গুল দিয়ে আলতো করে ঘষা দিলেই উঠে চলে আসবে। এই স্তর ধুয়ে চলে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার তিড়িং বিড়িং ডিম!
- এই ডিমটা অর্ধ-স্বচ্ছ। আপনি পেছন থেকে আলো ফেললে জ্বলজ্বল করবে এই ডিমটা। আর এবার এর লাফানোর প্রতিভা পরীক্ষা করে দেখা যাক! ডিমটাকে প্রথমে দুই ইঞ্চি ওপর থেকে টেবিলে ফেলে দেখুন, এটা লাফিয়ে ওপরে উঠে যাবে! এবার একটু একটু করে উচ্চতা বাড়িয়ে দেখুন। তবে এটা ঘরের ভেতরে না করে বাইরে করাই ভালো, কারণ বেশী উঁচু থেকে ফেললে এটা ভেঙ্গে যাবে সাধারণ ডিমের মতই।

ব্যাখ্যা
ডিমটাকে ভিনেগারে কেন ডোবানো হলো? ডিমের খোসা ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে তৈরি। ভিনেগারে আছে অ্যাসিটিক এসিড যার সংস্পর্শে এসে এই ক্যালসিয়াম কার্বনেট ধীরে ধীরে গলে যায়। এটা ঘটার সময়েই ডিমের আশেপাশে কার্বন ডাই অক্সাইডের বুদবুদ ওঠে। ফলে আপনি পান ডিমের ভেতরের অংশটি যা অর্ধস্বচ্ছ। আর এটি এমন রবারের বলের মত লাফায় কেন? কারণ হলো, ডিমের খোসা গলে গেলেও এর ভেতরের একটা পাতলা পর্দা রয়ে
যায় যা ডিমের কুসুম ও সাদা অংশকে রক্ষা করে। এই পর্দা পাতলা হলে কি হবে, যথেষ্ট শক্ত এবং ডিম ওপর থেকে ফেললেও একে ভেঙ্গে বা ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এই পর্দা।

আরও কিছু কৌশল
- তিড়িং বিড়িং ডিমটাকে এবার কর্ণ সিরাপে ভর্তি একটা বাটিতে ডুবিয়ে রেখে দিন কিছুদিন। এতে এই কিসমিসের মত কুঁচকে যাবে আর আকারেও আগের থেকে ছোট হয়ে যাবে। এর কারণ কি? কারণ হলো, ডিমের ওপরের এই পাতলা পর্দা অর্ধভেদ্য, অর্থাৎ একে ভেদ করে পানি যাওয়া আসা করতে পারে। আর পানির একটা ধর্ম হলো, বেশী পানি আছে এমন একটা দ্রবন থেকে সে কম পানি আছে এমন একটা দ্রবনে চলে যায়। কর্ণ সিরাপে পানির পরিমাণ কম, সে তুলনায় ডিমের ভেতরে পানির পরিমাণ বেশী। ফলে ডিম থেকে পানি বের হয়ে কুঁচকে যায়।

- এর পর একটা বাটিতে পানি নিন, এতে আপনার পছন্দের রঙের কিছুটা ফুড কালার দিন। এই পানিতে কোঁচকানো ডিমটাকে রেখে দিন। মোটামুটি ছয় ঘণ্টার মধ্যে এই পানি শুষে নিয়ে ডিমটা আবার আগের স্বাভাবিক আকৃতিতে ফিরে যাবে এবং সেই সাথে রঙ্গও হয়ে যাবে! এক্ষেত্রেও আগের নিয়মটাই খাটে। যেহেতু কোঁচকানো ডিমটার ভেতরে পানি তেমন নেই, তাই সে পানি টেনে নেবে এবং তার সাথে রঙটাকেও টেনে নেবে।
- এই ডিমটাকে খাবেন না যেন! এটাকে যতটা সময় ভিনেগারে রেখে দেওয়া হয়েছে, তাতে এটা খেতে ভালোও লাগবে না আর খাওয়াটা ঠিক নিরাপদও নয়। ডিমটাকে নিয়ে মজার এক্সপেরিমেন্টগুলো করে তারপর এটাকে ফেলে দেওয়াই ভালো।
বিভাগ: 
বিজ্ঞান

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top