GuidePedia

0
প্রিন্সেস ডায়ানা(বিস্ময়কর সব তথ্য)
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বধূদের মধ্যে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন কেবল একজন। তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা। বিশ্বজুড়ে তার মতো জনপ্রিয় নারী আর দ্বিতীয়টি আসেনি। আর বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল প্রিন্সেস ডায়ানা আর প্রিন্স চার্লসের অন্যরকম প্রেম কাহিনী। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম হলেও তাদের প্রেমকাহিনী নিঃসন্দেহে চিরস্মরণীয়।
বিস্ময়কর সব তথ্য

প্রিন্সেস ডায়ানা ও চার্লসের প্রেম ছিল সেরা রোমাঞ্চকর কাহিনী। ডায়ানার পুরো নাম ছিল ডায়ানা স্পেন্সার। তাকে দেখেই তার রূপে মুগ্ধ হয়েছিলেন তৃতীয় চার্লস। চার্লসের দৃষ্টিতে ডায়ানা পৃথিবীর সেরা সুন্দরী। আর ডায়ানার দৃষ্টিতেও প্রিন্স চার্লসই সবচেয়ে আরাধ্য পুরুষ। দুজন দুজনের প্রেমে মজে গেল। সারা বিশ্বে ঝড় উঠল। রানী এলিজাবেথ প্রথমে এ বিয়েতে অমত করলেও পরে রাজি হয়ে যান। ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই ধুমধামের সঙ্গে তাদের বিয়ে হয়ে গেল। বিশ্বের প্রায় পাঁচশ কোটি মানুষ টেলিভিশনের পর্দায় উপভোগ করল সত্যিকারের এক রাজকীয় বিয়ে। সেই সময় প্রিন্স চার্লসের বয়স ছিল বত্রিশ আর প্রিন্সেস ডায়ানার বয়স বিশ। চরম উৎসাহ-উদ্দীপনা আর আনন্দের জোয়ারে শুরু হলো প্রিন্স চার্লস আর প্রিন্সেস ডায়ানার নতুন জীবন। রাজকীয় জাহাজ ব্রিটানিয়াতে চড়ে হানিমুন করলেন তারা। সব ঠিকঠাকমতোই চলছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে ফিকে হতে লাগল সম্পর্ক। এর মধ্যে বিয়ের এক বছরের মাথায় ডায়ানা অনুভব করলেন চার্লস তাকে আগের মতো আর ভালোবাসে না। একান্তে সময় দিতে চায় না। একটু যেন বেশিই ব্যস্ততা দেখাচ্ছে। চাইলেই এড়িয়ে যায়। বিষয়টি এক দিন-দুই দিন করে বেশ ক'দিন ধরে খেয়াল করলেন ডায়ানা। এর পর প্রিন্সকে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন এই অবহেলার কী মানে। প্রিন্স তখন এড়িয়ে গেলেন। ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ রাজা হিসেবে তার ব্যস্ততার কথা বলে স্ত্রীর ভালোবাসাকে চেপে রাখলেন। আর এসব নিয়ে দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। দুজনেই দুজনকে সন্দেহ করতে থাকলেন।

প্রিন্স চার্লসও ডায়ানাকে নিয়ে নানা ঘটনা-রটনার খবর জানলেন। প্রায়ই এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হতো। আস্তে আস্তে তাদের মধ্যকার দূরত্ব আরও বেড়ে গেল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিয়ের সাত বছর পর ঘটল মারাত্দক ঘটনাটা। ১৯৮৯ সালের প্রথম দিকে প্রিন্স চার্লসের হাতে এলো একটা টেপ রেকর্ড ক্যাসেট। তাতে দুটি কণ্ঠের সংলাপ। একটি নারী কণ্ঠ, অন্যটি পুরুষ। নারী কণ্ঠটি প্রিন্সেস ডায়ানার। পুরুষ কণ্ঠটি জেমস গিলাবের। চার্লস অনুসন্ধান করে জানলেন গিলাব ছিলেন ডায়ানার বিয়ে-পূর্ব জীবনের বয়ফ্রেন্ড। আর এই কথোপকথনটি ওই সময়ের। সাইরিল রিনান নামে এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা এবং জেন নরগোভ নামে আরেকজন মিলে গোপনে আড়ি পেতে ডায়ানা ও জেমস গিলাবের কণ্ঠ ধারণ করেন। এর পর সেটি এক সময় প্রিন্স চার্লসের হাতে আসে। অল্প সময়ের মধ্যেই ক্যাসেটের বিষয়টি সবার নজরে চলে আসে। প্রকাশিত হয়ে পড়ে এই আলোচিত অডিও টেপটি। ক্যাসেট প্রকাশের পর সারা বিশ্বে আলোড়ন ওঠে।


এর ছোঁয়া লেগেছিল রাজপ্রাসাদেও। সংসারে ভাঙনের সুর উঠল। ১৯৯২ সালের ৯ ডিসেম্বর ডায়ানা ও চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা থাকার ঘোষণা দেন।

এর পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মিসরীয় ধনকুবের ডোডি আল ফাহাদের সঙ্গে জড়ান ডায়ানা।

কিন্তু খুব বেশিদিন দুনিয়ার বুকে টিকতে পারেননি সুন্দরী ডায়ানা। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট ব্রিটেনের রাজ পরিবারের অন্যতম সদস্য প্রিন্সেস ডায়ানা এবং তার বন্ধু মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবের ডোডি আল ফায়াদ প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। প্যারিসে টানেলে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর কয়েক সপ্তাহ আগে প্রিন্সেস ডায়ানা ও ডোডি আল ফায়াদের মধ্যে সব সম্পর্ক চুকে যাওয়ার দাবি উত্থাপিত হয়েছে। ডায়ানার মৃত্যু-রহস্য তদন্তকারী আদালতের সামনে সাক্ষ্য দানকালে রডনি টার্নার জানান, ১৯৯৭ সালের মধ্য-আগস্টে ডায়ানার সঙ্গে এক আলাপকালে তিনি জানতে পারেন, ডোডির সঙ্গে প্রিন্সেস ডায়ানা সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। উল্লেখ্য, এর দুই সপ্তাহ পরে মারা যান ডায়ানা ও ডোডি। অনেকের মতেই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ডায়ানা। তবে ডায়ানার মৃত্যু হত্যা নাকি নিছকই দুর্ঘটনা সেটি আজও রহস্যই রয়ে গেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top