GuidePedia

0
তারকা মানেই দূরের মানুষ। আকাশের তারা যেমন এই মানুষ সমাজ থেকে অনেক দূরে থাকে, তেমনি মানব সমাজের তারকারাও সাধারণ থেকে একটু আড়ালেই থাকেন। জীবন যাপন আর দর্শনও তাই অনেকটা আলাদা।
তবে তারকা হয়েছেন বলে হয়তো সমাজ-সংসার থেকে দূরে থাকেন; কিন্তু প্রকৃতি থেকে তো আর বাইরের কিছু নন। তাই যা কিছু প্রাকৃতিক তা নিয়েই চলতে হয়। কখনো কখনো এই প্রকৃতিই হয়ে ওঠে তারকাদের দূরের জীবনের আসল অবলম্বন!

বিয়ে-সংসার এসব হয়তো হলিউডি তারকাদের অনেকের জীবন-যাপনের সাথে মেলে না। তাই বলে তো একজন মানুষের বেঁচে থাকার মূল চাহিদাগুলো থেকে নিজেদের বঞ্চিত করা যায় না। আর তাই আনুষ্ঠানিকতার জালে না জড়িয়েও তারা সংসার করেন, সন্তানের মা-বাবা হন।

হলিউডে এমন অবিবাহিত মা-বাবার সংখ্যা কিন্তু নেহায়েত কম না। অন্তত একবার নিচের দিকে চোখ বোলালেই আঁচ করা যাবে ব্যপারটা।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
এর আগে কয়েক ঘাটে জল খেয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ব্রাড পিট দু’জনই। ২০০৫ সালে ‘মিঃ অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’  চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে কাছাকাছি আসেন দু’জন। তারপর সেই কাছাকাছি কয়েক মাসের মধ্যেই হয়ে গেল একদমই পাশাপাশি। গত সাত বছর ধরে বসবাস করছেন এক ছাদের নিচে। এই সময়ে সম্পর্ক ভাঙল কত প্রেমিক-প্রেমিকা জুটির, দুই প্রান্তে সরে গেছেন আঠালো ভালোবাসায় গড়া বিয়ের সম্পর্কও। অথচ বিয়ে না করেও কী মসৃণ ভাবে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রাঞ্জেলিনা জুটি। আনুষ্ঠানিক বিয়েহীন তাদের সংসারে আছে ছয় সন্তান। এর মধ্যে দত্তক তিনজনের সাথে আছেন নিজেদের তিনজন। মার্শেলিন, নক্স লিও এবং শিলোহ নামের জোলি-পিটের তিনজন ভালোবাসার সন্তান আছে।

সুসান সারানডন
অস্কারজয়ী খ্যাতিমান এই তারকার মিল আছে জোলির সাথে। ১৯৮৮ সালে ‘বুল ডারহ্যাম’ ছবিটি করতে গিয়ে সখ্যতা টিম রবিন্সের সাথে। এরপর একসাথে বাস করেছেন জোলির মত সাত বছর না, পাক্কা ২৩ বছর। বিয়েহীন এই দীর্ঘ সময়ে কখনো শেষ হবে এটা ভাবেননি কেউই। এই দুজনকে দেখেই তো উৎসাহিত জোলি-পিট কিংবা অন্যরা। সুসান সারানডন আর টিম রবিন্সের সম্পর্কের ভাঙন নিয়ে এখনো নানান কথা শোনা যায়। তাদের একত্রে বসবাসকালীন এই সম্পর্ককে চাইলেও মুছে ফেলতে পারবেন না কেউই। ভালোবাসার চিহ্ন স্বরুপ তাদের দুটি সন্তান আছে। জ্যাক হেনরি (২০) এবং মিলেস গুথেরি (১৭) নামের দুটি ছেলে আছে তাদের।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে ‘ডেড ম্যান ওয়াকিং’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কার লাভ করেন সুসান। আর চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন টিম রবিন্স!

টিম রবিন্সের আগে ইতালিয়ান পরিচালক ফ্রাংকো আমুরির সঙ্গেও একছাদের নিচে বাস করেছিলেন সুসান। ১৯৮৫ সালে সেই ঘরে ইভা আমুরি নামের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

হ্যালি বেরি
ন্যাড়া নাকি একবারই বেলতলায় যায়। ফাটা মাথার ধকল সামলে উঠতে বেশ সময় লাগে। তবে প্রথমবারে নয়, বিয়ে নামের বেল হ্যালি বেরির মাথায় পড়েছে দুই দুইবার। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ মানেই কোর্ট, কাগজপত্র, সই, টাকা পয়সা খসানো- সবমিলিয়ে বিরাট হ্যাপা। দ্বিতীয় বিয়ে বিচ্ছেদের পর তাই আর ও পথে হাটেননি হ্যারি। একসাথে থাকা শুরু করেছিলেন বিয়েটিয়ে ছাড়াই। সঙ্গী মডেল গ্যাব্রিয়েল অব্রে। ২০০৭ এর শুরু হওয়া সে জীবনের ইতিও ঘটে গেছে ইতিমধ্যে। ২০১০ এর শুরুতে দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়। মাঝের এই আড়াই বছরে সম্পর্কটা বেশ মাখোমাখোই ছিল। ২০০৮ সালে দু’জনের একটি মেয়ে সন্তান হয়। সম্প্রতি অভিনেতা অলিভিয়ার মার্টিনেজকে বিয়ে করেছেন হ্যারি। বেল তলায় যাওয়ার ব্যথা বোধহয় ভুলে গেছেন তিনি!

এলিজাবেথ টেইলর
সাতজন পুরুষকে মোট আটবার বিয়ে করেছিলেন হলিউডের এই অভিনেত্রী। (রিচার্ড বার্টন কে দুইবার। দুইবারই বিচ্ছেদ)
এতবার বিয়ে করা এলিজাবেথও জন্ম দিয়েছিলেন বিয়ে বহির্ভুত সন্তান! এলিজাবেথ মারা যান ২০১১ সালে। তার মৃত্যুর পরই জানা যায় এই ‘অদ্ভুত’ ঘটনার কথা। টেইলর বেঁচে থাকতে কখনো জানা যায়নি কারণ নিজের গর্ভের এই সন্তানটিকে জন্মের পরপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। টেইলরের ঘনিষ্ট বন্ধু আধ্যাত্মিক গুরু জন কোহান তার মৃত্যুর পরই জানান টেইলরের বিয়ে বহির্ভুত এক কন্যা সন্তান আছে। কন্যাটির জন্ম ষাট দশকে। এলিজাবেথ টেইলর তখন কোহানের ক্লায়েন্ট। ওই সময়ে তিনজন পুরুষের সাথে সম্পর্ক ছিল টেইলরের। তাই নিশ্চিত হওয়া যায়নি, ওই কন্যা সন্তানের বাবা কে? পিতৃ পরিচয় নিয়ে ঝামেলায় পড়ায় মেয়েটিকে আয়ারল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন টেইলর। মেয়ের অবশ্য নাম রেখেছিলেন নোরা। জীবনধারণের অর্থ নিয়মিত দিতেন তবে কখনো যোগাযোগ করেননি।

কোহানকে টেইলর অনুরোধ করেছিলেন তার মৃত্যু পর্যন্ত যেন বিষয়টি কাউকে না বলা হয়। মেয়েটি এখন কোথায় আছে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
টেইলর বিয়ে বহিভূত সন্তানের কথা গোপন করলেও আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার করেননি। নিজেই বলে দিয়েছেন। আর্নল্ডের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন মিলড্রেড বায়েনা। সহকারী ছিলেন টানা ২০ বছর। মিলেড্রেডের কাজের জায়গা ছিল যেখানে স্ত্রী সন্তানসহ শোয়ার্জেনেগার থাকতেন সেখানেই। তবুও সহকারী বলে কথা। মিলড্রেডের গর্ভে জন্ম নেয় শোয়ার্জেনেগারের সন্তান। সেই সন্তানের বয়স এখন ১৫এর বেশি। নিজের অপরাধ স্বীকার করে আর্নল্ডের কথা ছিল “আমার পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের আঘাত দেয়ার মত কাজ করেছি আমি। এজন্য আমি আমার স্ত্রী মারিয়া ও সন্তানদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।” একজন স্ত্রী হিসেবে বিষয়টি সহজে না মেনে নেওয়ার কথা আর্নল্ডের স্ত্রীর। তবুও টিকে গেছে সংসার।

স্টিভেন টাইলার
কেমন হবে হঠাৎ করে বাবা নামের মানুষটি বদলে গেলে? ভালো জবাব দিতে পারবেন হলিউড অভিনেত্রী লিভ টাইলার। জন্মের প্রথম নয় বছর বয়স পর্যন্ত জানতেন তার বাবা টড রানগ্রেন। কিন্তু অ্যারোস্মিথ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট স্টিভেন টাইলারের মেয়ে হঠাৎ ফাঁস করে দেন তার বাবার বেবে বুয়েল নামের এক মহিলার সাথে গোপন সম্পর্ক ছিল। তার সেই সম্পর্কের ফসল লিভ টাইলার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top