GuidePedia

0
আবু ধাবি নিবাসী এক হিন্দু পরিবার পুরো রমজান মাসই রোজা রাখছেন। এটাই প্রথমবার
নয়। ৫৪ বছর বয়সী ভারতীয় প্রবাসী ভাক্কাম জয়লাল ও তার পরিবার গত ১৪ বছর ধরে রোজা পালন করে আসছেন। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে অনলাইন গালফ নিউজে। জয়লাল জানান, রোজা রাখা ছাড়া কোন রমজান কল্পনাই করতে পারেন না তারা। অনেকটা ভেতর থেকে একরকম তাগিদ অনুভব করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। জয়লাল, তার স্ত্রী যমুনা (৪৩) ও তাদের প্রাপ্তবয়স্ক দুই সন্তান প্রত্যেকেই রমজান মাসে রোজা রাখেন। ভারতের কেরালা থেকে আসা জয়লাল ৩২ বছর ধরে আরব আমিরাতের এ শহরটিতে বাস করছেন। বর্তমানে তিনি একটি সিভিল কনসালটেন্ট ফার্মে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। জয়লাল জানান, ২১ বছর আগে থেকে তিনি রোজা রাখা শুরু করেন। আবু ধাবিতে এক মুসলিম পরিবারের সঙ্গে বসবাস করার সময় তার মধ্যে এ অভ্যাস গড়ে ওঠে। জয়নাল বলেন, ওই বাসায় আমি একাই অমুসলিম ছিলাম, তাই আমিও রোজা রাখবো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। প্রথম অভিজ্ঞতা অসাধারণ ছিল, তার পর থেকে দুই দশক পেরিয়ে গেছে। সে থেকে এখন পর্যন্ত এমন কোন রমজান যায়নি যেবার আমি রোজা রাখিনি। যমুনা তার স্বামীকে অনুসরণ করেই রোজা রাখা শুরু করেছিলেন। প্রথম প্রথম কিছুটা কষ্ট হলেও পরে দারুণ এক অভিজ্ঞতাই অর্জন করেছেন বলে জানালেন তিনি। তাদের দুই সন্তান ঐশ্বর্য (১৭) ও রাহুল (২১) যথাক্রমে ৮ ও ১০ বছর থাকাকালে রোজা রাখা শুরু করে। যমুনা তার সন্তানদেরকে কখনও রোজা রাখার ব্যাপারে জোর করেননি বরং তারা নিজে থেকেই রোজা রাখা শুরু করে। রমজানের চর্চা ও শিক্ষা তাদের পিতা-মাতার মতো তাদেরকেও আকৃষ্ট করেছিল। তারা ইউএই-তে অবস্থান করুক অথবা অন্য কোন দেশে, কখনই রমজান মাসে রোজা রাখতে ভুল হয় না তাদের। রোজার প্রতি জয়লাল, তার স্ত্রী, সন্তানদের নিষ্ঠা ও পরিবারের মধ্যে লক্ষণীয় এক আত্মিক শক্তির সঞ্চার লক্ষ্য করেন জয়লালের ৮২ বছর বয়সী মা। অনুপ্রাণিত হন তিনিও। রোজা না রেখে আর থাকতে পারলেন না। দু’দিন রোজা রেখেছিলেন। পরে স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে পুরো রমজান রোজা রাখা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের প্রত্যেকেই রোজা রাখার ফলে শারীরিক ও মানসিক ভাবে উপকৃত হন বলে তৃপ্তি প্রকাশ করেন। জয়লালের ভাষ্য, আত্মসংযমের আদর্শ পন্থা হলো রোজা। এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শান্ত সুশৃঙ্খল মানসিক অবস্থা আনয়নেও রোজা সাহায্য করে বলে মন্তব্য করেন জয়লাল। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও রমজান মাসের সিয়াম সাধনার চর্চাকে যথাযথ মর্যাদায় আপন করে নেয়ার ক্ষেত্রে জয়লাল ও তার পরিবার নিঃসন্দেহে আদর্শ এক উদাহরণ। আরব আমিরাতে ভিন্ন ধর্মানুসারীদের মধ্যে রমজানের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারাদের মধ্যে জয়লাল একা নন। এরকম আরও অনেক অমুসলিম আছেন যারা সারা মাস রোজা পালন করে থাকেন। যারা মুসলিম ভাই-বন্ধুদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সৃষ্টিকর্তার দেয়া আত্মশুদ্ধির সর্বোত্তম পন্থা সিয়াম সাধনায় ব্রত হয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top